বন্দর প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আধিপত্য অটোস্ট্যান্ডের দখলদারিত্বকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বে জোড়া খুনের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। গত রোববার রাতে কুদ্দুস নিহতের ঘটনায় তার মেয়ে রোকসানা আক্তার এবং অপরটি সোমবার দুপুরে মেহেদি খুনের ঘটনায় তার বড় ভাই খালিদ সাইফুল্লাহ বাদী হয়ে ওই মামলা দুটি দায়ের করেন। এদের মধ্যে কুদ্দুস হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার ও ১৩জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৩০জনকে আসামী করা হয় এবং মেহেদি হত্যা মামলায় একই ওয়ার্ডে সদ্য সাবেক কাউন্সিলর শাহিন মিয়াসহ ২৯জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৩০/৪০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়। এ ঘটনায় বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী বলেন, বলেন, এখন পর্যন্ত ২ মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দু’টি মামলাতেই চারজন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওসি জানান, দিনমজুর আব্দুল কুদ্দুস (৬০) হত্যাকাণ্ডে তার কন্যা রোকসানা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। এ মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটির ২১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারসহ ১৩ জনকে এজাহারনামীয় এবং আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলাটি করেছেন খালেদ সাইফুল্লাহ। তার ভাই বন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান (৪২) হত্যার অভিযোগে মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি ৩০ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ৪ নম্বর আসামি নারায়ণগঞ্জ সিটির ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহীন মিয়া।
দু’টি মামলায় উল্লেখ করা হয়, বন্দর রেললাইন, হাফেজীবাগ ও সালেহনগর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার, বাবু শিকদার গ্রুপ ও সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা গ্রুপের জাফর-রনিদের দীর্ঘদিন যাবৎ দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ দ্বন্দ্বের জেরে গত শুক্রবার বন্দর রেললাইন এলাকায় রাস্তার উপর উভয়পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পরদিন থানায় একটি মামলাও হয়।
এই ঘটনার জেরে শনিবার রাতে মেহেদী ও কুদ্দুস খুন হন বলে উভয় মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
দু’টি মামলাতেই সাবেক দুই কাউন্সিলরকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। মামলা দু’টিতে সাবেক আরেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশার গ্রুপের সঙ্গে দ্বন্দ্বে হত্যাকাণ্ড দু’টি সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ থাকলে একটির আসামির তালিকায়ও আশার নাম নেই। তবে তার সমর্থক রনি ও জাফরকে মেহেদী হত্যা মামলায় আসামি হয়েছে। বিপরীতে বাবু শিকদার, শ্যামল ও বাবু ওরফে জুয়াড়ি বাবু বৃদ্ধ কুদ্দুস হত্যা মামলার আসামির তালিকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সময় সখ্যতা থাকলেও গত কয়েক মাসে বন্দরে আধিপত্য বিস্তার, মাদক বিক্রির নিয়ন্ত্রণ ও ইজিবাইক স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে বাবু সিকদার ও শ্যামল গ্রুপের সঙ্গে রনি ও জাফর গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে। উভয় গ্রুপের সঙ্গে সাবেক দুই কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা ও হান্নান সরকারের সখ্যতা রয়েছে।
Leave a Reply