1. admin@dainikbijoy24.com : dainikbijoy-24 :
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্বাস্থ্য কার্ড পাচ্ছেন ৩৬ জেলার ৪,৫৫১ জুলাই যোদ্ধা  পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের পানিবন্দী মানুষের পাশে চসিক মেয়র  ডা. শাহাদাত হোসেন বন্দরে অস্ত্র ঠেকিয়ে গরু নামানোর ভিডিও করায় তিন সাংবাদিকের ওপর হামলা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এর উদ্যোগে আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণ সভায় ডা. শাহাদাত হোসেন  নারায়ণগঞ্জে জাতীয় যুবশক্তির সাংগঠনিক কার্যক্রম ও থানা সফর শুরু নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা না হওয়া একটি বড় সাফল্য: চসিক মেয়র নতুন বাজেটে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে যেসব পণ্যের চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই বিএনপি নেতা গ্রেফতার  আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর জীবন ও কর্ম পরিশীলিত এবং দেশপ্রেমিক প্রজন্ম তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। — চট্টগ্রাম সংস্কৃতি কেন্দ্র আয়োজিত ‘আমাদের ওবায়েদ ভাই’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠানে বক্তারা মুন্সিগঞ্জ লিফ লাউঞ্জে আন্তর্জাতিক মা দিবস উদযাপন

চোরতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র পরস্পর সহায়ক ও পরিপূরক ৥ মোঃ মামুন হোসেন-

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১২৬ বার পাঠ করা হয়েছে

বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে বিভিন্ন ধরনের শাসনব্যবস্থা এবং শাসকশক্তির বিকাশ ঘটেছে, যার মধ্যে চোরতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এই দুটি শাসনব্যবস্থা একে অপরের পরিপূরক এবং সহায়ক হিসেবে কাজ করে, যার ফলে রাষ্ট্রের শাসন কাঠামোতে এক ধরনের অস্থিতিশীলতা ও অরাজকতা সৃষ্টি হয়। চোরতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে, যা সমাজ, রাষ্ট্র এবং জনগণের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। এই প্রবন্ধে আমরা চোরতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের মৌলিক বৈশিষ্ট্য, তাদের সম্পর্ক এবং সমাজে এর প্রভাব আলোচনা করব।
চোরতন্ত্র হলো এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে রাষ্ট্রের শাসকগণ আইন-শৃঙ্খলা ও সমাজের নিয়ম নষ্ট করে নিজেদের স্বার্থে রাষ্ট্রের সম্পদ ও ক্ষমতা অপব্যবহার করেন। এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করা বা অবৈধভাবে সংগ্রহ করা সাধারণ ব্যাপার হয়ে ওঠে। চোরতন্ত্রে শাসকরা নৈতিকতা ও আইনকে উপেক্ষা করে নিজেদের সুবিধা ও লাভের জন্য ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শাসকরা ব্যক্তিগত লাভের জন্য জনগণের ওপর অত্যাচার এবং শোষণ চালান।
স্বৈরতন্ত্র হলো এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে একমাত্র শাসক বা একদল শাসক সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে রাখেন এবং জনগণের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন করেন। স্বৈরতান্ত্রিক শাসনে শাসকগণ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শাসন করেন এবং তাদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রায়ই অত্যাচার ও নিপীড়ন প্রয়োগ করেন। এই শাসনব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রায়শই সীমিত থাকে।
চোরতন্ত্র এবং স্বৈরতন্ত্র পরস্পর একে অপরকে সহায়ক ও পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। একটি স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চোরতন্ত্রের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। কারণ, যখন শাসকরা জনগণের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নষ্ট করে এবং তাদের শক্তি কেন্দ্রীভূত করে, তখন তারা তাদের শোষণমূলক কার্যক্রমকে চালিয়ে যেতে পারেন। এই পরিবেশে রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করা বা অবৈধভাবে উপার্জন করা সহজ হয়ে ওঠে। স্বৈরতান্ত্রিক শাসকরা সাধারণত ক্ষমতা ধরে রাখতে চোরতন্ত্রের নানা উপায় অবলম্বন করেন, যেমন অবৈধ অর্থ উপার্জন, দুর্নীতি, দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন এবং জনগণের ওপর দমন-পীড়ন।
একটি স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চোরতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করে তোলে, কারণ রাষ্ট্রের প্রধান শাসক বা সরকারের সদস্যরা নিজের ক্ষমতা সুসংহত করার জন্য রাষ্ট্রের সম্পদ ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। এর ফলে, সাধারণ মানুষের জন্য রাষ্ট্রের সেবা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, এবং ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত লাভের জন্য পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দুর্বল ও অস্থির করে তোলে।
চোরতন্ত্র এবং স্বৈরতন্ত্রের মধ্যে এই সহায়ক সম্পর্ক জনগণের প্রতি অত্যাচার এবং শোষণ বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। স্বৈরতান্ত্রিক শাসকরা যখন নিজেদের শাসন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করেন, তখন তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য থাকে ক্ষমতা অর্জন এবং তা ধরে রাখা। কিন্তু এই ক্ষমতা রক্ষা করতে তাদের প্রয়োজন হয় অবৈধ অর্থ উপার্জন, যা চোরতন্ত্রের মাধ্যমে হয়। চোরতন্ত্রের মাধ্যমে শাসকরা রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করে, করপোরেট সংস্থাগুলোর সাথে অবৈধ চুক্তি করে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করেন।
এছাড়া, স্বৈরতন্ত্র ও চোরতন্ত্র একে অপরকে পরিপূরক করতে সাহায্য করে। স্বৈরতান্ত্রিক শাসকরা নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে রাষ্ট্রের জনগণকে দমন-পীড়ন করেন, তবে এটি শুধু তাদের শাসনের মেয়াদ বাড়ায় না, বরং তাদের চোরতান্ত্রিক কার্যকলাপকে আরও সহজতর করে তোলে। একে অপরের প্রতি সহায়ক থাকার ফলে, স্বৈরতান্ত্রিক শাসকরা চোরতন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সম্পদ আত্মসাৎ করতে পারেন, এবং চোরতন্ত্র এই প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
চোরতন্ত্র এবং স্বৈরতন্ত্রের সমন্বয়ে একটি রাষ্ট্রে সামাজিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং রাজনৈতিক অবস্থা তৈরি হয়। যখন রাষ্ট্রের শাসকরা নিজেদের স্বার্থে রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করতে শুরু করেন, তখন জনগণের মধ্যে হতাশা, অসন্তোষ এবং অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। জনগণ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে এবং সমাজে এক ধরনের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এই ক্ষোভ পরবর্তীতে রাজনীতি এবং সমাজের প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে, যা রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে পারে।
এছাড়া, সমাজের মধ্যে বৈষম্য ও দুর্নীতির প্রভাব পড়ে। সাধারণ মানুষ যখন দেখতে পায় যে, শাসকরা তাদের জন্য কিছু করেন না, বরং নিজের স্বার্থে রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করে, তখন তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বাড়ে। এর ফলে, সমাজে অপরাধমূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি পায় এবং নাগরিকদের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলার প্রতি অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়।
চোরতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র দুটি একে অপরকে সমর্থন এবং পরিপূরক করে সমাজ ও রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। স্বৈরতান্ত্রিক শাসকরা নিজেদের ক্ষমতা স্থির রাখতে চোরতন্ত্রের সহায়তা নেন, এবং চোরতন্ত্র রাষ্ট্রের সম্পদ ব্যক্তিগত লাভে ব্যবহার করতে সাহায্য করে। এর ফলে সমাজে বৈষম্য, অস্থিরতা ও দুর্নীতির বিস্তার ঘটে, যা দেশের রাজনীতি এবং অর্থনীতি দুর্বল করে তোলে। এজন্য, একটি সুষ্ঠু এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য চোরতন্ত্র এবং স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দেশের সকল নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2025
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি