1. admin@dainikbijoy24.com : dainikbijoy-24 :
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ১১:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বন্দরে অস্ত্র ঠেকিয়ে গরু নামানোর ভিডিও করায় তিন সাংবাদিকের ওপর হামলা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এর উদ্যোগে আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণ সভায় ডা. শাহাদাত হোসেন  নারায়ণগঞ্জে জাতীয় যুবশক্তির সাংগঠনিক কার্যক্রম ও থানা সফর শুরু নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা না হওয়া একটি বড় সাফল্য: চসিক মেয়র নতুন বাজেটে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে যেসব পণ্যের চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই বিএনপি নেতা গ্রেফতার  আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর জীবন ও কর্ম পরিশীলিত এবং দেশপ্রেমিক প্রজন্ম তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। — চট্টগ্রাম সংস্কৃতি কেন্দ্র আয়োজিত ‘আমাদের ওবায়েদ ভাই’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠানে বক্তারা মুন্সিগঞ্জ লিফ লাউঞ্জে আন্তর্জাতিক মা দিবস উদযাপন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির স্বরণ সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিদেশে নয়, দেশের ভেতরেই সমস্যার সমাধান করতে হবে  মাহমুদনগরে শহীদ জিয়া স্মরণে বিএনপি নেতা সামাউনের দোয়া-তবারক বিতরণ

ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সৎ-যোগ্য লোকের বিকল্প নেই

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৮৯ বার পাঠ করা হয়েছে

মোঃ মামুন হোসেন

সমাজ একটি সমষ্টিগত ব্যবস্থা, যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তির ভূমিকা তার দায়িত্ব ও কর্তব্যের ওপর নির্ভরশীল। ন্যায় ও ইনসাফ হলো সমাজের ভিত্তি, যা জনগণের মধ্যে শান্তি, সমতা ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ সৃষ্টি করে। কিন্তু এই ভিত্তি তখনই স্থায়ী হয়, যখন সমাজে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকে। সৎ ও যোগ্য ব্যক্তি সমাজের নৈতিক ভিত্তি রক্ষার পাশাপাশি শাসন, শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে সক্ষম হন। তাদের অনুপস্থিতিতে সমাজ দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের শিকার হয়।
ন্যায় ও ইনসাফ অর্থ হলো প্রতিটি মানুষের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করা এবং কারো প্রতি কোনো ধরনের অবিচার না করা। এটি ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায় প্রতিষ্ঠিত না হলে সমাজে শোষণ, বঞ্চনা এবং বৈষম্য বাড়তে থাকে। ইসলামে ন্যায় ও ইনসাফের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে, “আল্লাহ ন্যায়বিচার, সৎকর্ম এবং আত্মীয়দের দান করার আদেশ দেন এবং অন্যায়, অশ্লীলতা ও অত্যাচার করতে নিষেধ করেন” (সুরা নাহল, ৯০)। একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়তে হলে সবার আগে এর নেতৃত্বে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের আনতে হবে। কারণ, তারা কেবল ব্যক্তিগত লাভের পেছনে ছুটবেন না; বরং নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন। সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে। প্রথমত, তাদের নৈতিকতা ও সততা প্রশ্নাতীত। তারা মিথ্যা, দুর্নীতি এবং অন্যায় থেকে নিজেদের দূরে রাখেন। দ্বিতীয়ত, তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে দূরদর্শী ও দক্ষ। সমাজের সমস্যাগুলি সঠিকভাবে চিহ্নিত করে সেগুলোর কার্যকর সমাধান বের করার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। তৃতীয়ত, তারা সর্বদা জনগণের কল্যাণে কাজ করেন এবং ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রাধান্য দেন না। এ ধরনের ব্যক্তিরা কেবল আইন বা বিধানের ওপর নির্ভর করেন না; বরং নিজেদের আচরণ এবং কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ন্যায় ও ইনসাফের উদাহরণ সৃষ্টি করেন। তারা সমাজে এমন একটি পরিবেশ গড়ে তোলেন, যেখানে অন্যরাও নৈতিকতা ও সততার পথে চলতে উৎসাহিত হয়।
ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা অপরিসীম। সৎ ও যোগ্য নেতা সমাজের বিভিন্ন স্তরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামের ইতিহাসে হজরত উমর (রাঃ)-এর শাসনামল একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার শাসনকালে তিনি সবসময় জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন এবং বিচারকার্যে কোনো পক্ষপাতিত্ব করেননি। সৎ নেতৃত্ব সমাজে আইনের শাসন নিশ্চিত করে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়। এর ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে একটি আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং তারা সামাজিক দায়িত্ব পালনেও উৎসাহী হয়। যখন সমাজে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তির অভাব দেখা দেয়, তখন সেটি বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়। দুর্নীতি, অন্যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নৈতিক অধঃপতন সমাজকে অস্থির করে তোলে। বিশেষত, নেতৃত্বে অযোগ্য ব্যক্তিরা থাকলে তারা নিজেদের স্বার্থে আইনকে অপব্যবহার করে এবং সাধারণ মানুষ বঞ্চনার শিকার হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অনেক সমস্যার মূল কারণ হলো যোগ্য নেতৃত্বের অভাব। সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিদের অনুপস্থিতিতে অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক অবিচার এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের কারণে অনেক দেশ সম্পদশালী হওয়া সত্ত্বেও দারিদ্র্য এবং বৈষম্যের শিকার। সমাজে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের ভূমিকা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষা এবং নৈতিক প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। প্রাথমিক স্তর থেকে নৈতিকতা, সততা এবং সমাজসেবার মানসিকতা গড়ে তোলার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এছাড়া, রাষ্ট্র এবং সমাজের উচিত এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা, যেখানে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিরা নেতৃত্বে আসার সুযোগ পান। দুর্নীতি এবং পক্ষপাতমূলক আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি, সমাজের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি চালু করতে হবে। সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিরা কেবল সমাজের উন্নয়নের দিকনির্দেশনা দেন না; তারা সমাজের নৈতিক মানদণ্ড স্থাপন করেন। তাদের অনুপস্থিতিতে কোনোভাবেই একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। কারণ, ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তি হলো ব্যক্তিগত এবং সামষ্টিক সততা, যা সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া সম্ভব নয়। অতএব, একটি সমাজ যদি সত্যিকার অর্থে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক হতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এটাই একটি সুস্থ, উন্নত এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

One response to “ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সৎ-যোগ্য লোকের বিকল্প নেই”

  1. Md. Nazrul Islam Sikdar. says:

    মাশাল্লাহ ♥️👌💗আলহামদুলিল্লাহ এ ধরনের লেখা আমরা পাঠক সমাজ সকল সাংবাদিক ভাইয়ের কলম থেকেই আশা করি, যাতে সমাজের মানুষ দূর্নীতি সন্ত্রাস চাঁদাবাজ ধর্ষণ ও মাদক মুক্ত রাষ্ট্র জনগন পেতে পারে, এ লক্ষে “মদিনার খেলাফত ”
    এর উপর লেখা আশা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2025
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি