বন্দর (নারায়ণগঞ্জ)সংবাদদাতা:
ভাবতেই অবাক লাগে যেই সড়ক বন্দরবাসীর জীবনমানের ভাগ্য পরিবর্তন করার কথা অথচ সেই সড়কিটিই হয়ে উঠেছে আতঙ্কের নাম! প্রসঙ্গতঃ নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলাধীন মদনপুর টু মদনগঞ্জ সড়কটি ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়েছিল বছরখানেক আগে।
একসময় ভাঙা স্বপ্ন জোড়া লাগবে ভেবে এলাকাবাসীর স্বস্তির কারণ ছিল এই সড়কটি। কিন্তু বাস্তবতা আজ তা নিয়ে গেছে বিপরীতমুখে। বছর না ঘুরতেই সেটির আজ বেহাল দশা। খানাখন্দে ভরা, পিচ উঠে যাওয়া, কোথাও কাদার ভাগাড়—এ যেন সড়ক নয়, জনদুর্ভোগের খোলা চিত্রশালা।
একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। মাটি আর কাদা হয়ে যায় একাকার। যাত্রীদের চলাচলে দেখা দেয় চরম হতাশা। ভারী যানবাহনগুলো গর্তে হোঁচট খায়, অনেক সময় উল্টে যায়। এর ফলে রাস্তায় তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। ক্ষতিগ্রস্ত হয় অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে স্কুলগামী শিশুর জীবন পর্যন্ত।
এইতো দু’দিন আগেই বন্দর বাজার থেকে নবীগঞ্জের মধ্যেই ৩টি মালবাহী ট্রাক উল্টে গেল। মানুষ আহত হলো, খবর প্রচার হলে, লোকজন প্রতিবাদ করল। কিন্তু কে শুনে কার কথা—কর্তৃপক্ষ সবাই যেন কচ্ছপ নিদ্রায় শায়িত।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ধামগড়ের ইস্পাহানী বাজার, নবীগঞ্জের টি হোসেন গার্ডেন এলাকা, বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বন্দর স্ট্যান্ড—সবখানেই একই দৃশ্য। রাস্তার গায়ে আর পিচ নেই, উঠে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে কাদাযুক্ত মাটি। প্রতিটি পদক্ষেপেই যেন লুকিয়ে আছে দুর্ঘটনার ফাঁদ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি শুধুই একটি সড়ক নয়—এটি বন্দর উপজেলার প্রাণরেখা। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়েই হাজার হাজার মানুষ রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে যাতায়াত করেন। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, অফিস—সবই এই পথের উপর নির্ভরশীল। অথচ বছরের পর বছর ধরে, সংস্কারের নামেও হচ্ছে কেবল ‘চোখে ধুলো’ দেওয়া কাজ। কিছুদিন পরপর ইট বা খোয়া ফেলে দায় সারছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান মিলছে না।
এই ভয়াবহ অবস্থার প্রেক্ষিতে এলাকাবাসীর দাবি—আর দেরি নয়। দ্রুত ও টেকসই সংস্কার দরকার এই সড়কে। তারা নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যেন মানবিক বিবেচনায় বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়।
বন্দরবাসীর ভাষায়, “রাস্তা আমাদের জীবন, আর এখন সে জীবনই ঝুঁকিতে। উন্নয়নের নামে যদি এই ভোগান্তিই নসিব হয়, তাহলে সেটা উন্নয়ন নয়—ধোঁকা!”
Leave a Reply